ব্যাটে মোহাম্মদ ওয়াসিম, বলে জুনায়েদ সিদ্দিকীর দারুণ পারফরম্যান্স
এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের সপ্তম ম্যাচে স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ওমানের মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ লড়াই অনুষ্ঠিত হয়। টস জিতে ওমান প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু তাদের এই সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণিত হয়, কারণ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যাটসম্যানরা দারুণ ব্যাটিং প্রদর্শন করে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তারা ১৭২ রানের এক বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায়। জবাবে, ওমানের ইনিংস মাত্র ১৩০ রানে গুটিয়ে যায়, এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত ৪২ রানের এক দুর্দান্ত জয় পায়।
আমিরাতের হয়ে ওপেনার মোহাম্মদ ওয়াসিম এবং আলিশান শারাফু অসাধারণ পার্টনারশিপ গড়ে দলকে শক্তিশালী ভিত গড়ে দেন। ওয়াসিম ৬৯ রান করেন এবং শারাফু ৫১ রান করেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যাটিং স্কোরকার্ড
ব্যাটসম্যান | রান | বল | ৪s | ৬s | স্ট্রাইক রেট | আউটের ধরণ |
আলিশান শারাফু | ৫১ | ৩৮ | ৭ | ১ | ১৩৪.২১ | b জিতেন রমানন্দী |
মোহাম্মদ ওয়াসিম (C) | ৬৯ | ৫৪ | ৬ | ৩ | ১২৭.৭৮ | রান আউট |
আসিফ খান | ২ | ৫ | ০ | ০ | ৪০.০০ | b সময় শ্রীবাস্তব |
মোহাম্মদ জোহাইব | ২১ | ১৩ | ২ | ১ | ১৬১.৫৪ | c সময় শ্রীবাস্তব b জিতেন রমানন্দী |
হর্ষিত কৌশিক | ১৯ | ৮ | ১ | ২ | ২৩৭.৫০ | অপরাজিত |
রাহুল চোপড়া (WK) | ০ | ১ | ০ | ০ | ০.০০ | c আমির কালিম b হাসনাইন শাহ |
ধ্রুব পারাশার | ১ | ১ | ০ | ০ | ১০০.০০ | অপরাজিত |
অতিরিক্ত রান (Extras run): ৯ (লেগ বাই ১, ওয়াইড ৮)
মোট রান: ১৭২ (৫ উইকেট, ২০ ওভার)
ওমানের বোলিং
ওমানের বোলারদের মধ্যে জিতেন রমানন্দী কিছুটা সফল ছিলেন, যিনি ২ উইকেট নেন। কিন্তু বাকিরা রান আটকাতে ব্যর্থ হন।
ওমানের বোলিং স্কোরকার্ড
বোলার | ওভার | মেডেন | রান | উইকেট | ইকোনমি |
শাকিল আহমেদ | ৩ | ০ | ১৬ | ০ | ৫.৩৩ |
ফয়সাল শাহ | ৪ | ০ | ৪৫ | ০ | ১১.২৫ |
আমির কালিম | ১ | ০ | ১৪ | ০ | ১৪.০০ |
হাসনাইন শাহ | ৪ | ০ | ৩৪ | ১ | ৮.৫০ |
জিতেন রমানন্দী | ৪ | ০ | ২৪ | ২ | ৬.০০ |
সময় শ্রীবাস্তব | ৪ | ০ | ৩৮ | ১ | ৯.৫০ |
ওমানের ব্যাটিং পারফরম্যান্স
১৭৩ রানের কঠিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওমান শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে। তাদের কোনো ব্যাটসম্যানই বড় স্কোর করতে পারেননি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৪ রান করেন আরিয়ান বিস্ট।
ওমানের ব্যাটিং স্কোরকার্ড
ব্যাটসম্যান | রান | বল | ৪s | ৬s | স্ট্রাইক রেট | আউটের ধরণ |
যতিন্দর সিং (C) | ২০ | ১০ | ৪ | ০ | ২০০.০০ | b জুনায়েদ সিদ্দিকী |
আমির কালিম | ২ | ২ | ০ | ০ | ১০০.০০ | c হর্ষিত কৌশিক b জুনায়েদ সিদ্দিকী |
হাম্মাদ মির্জা | ৫ | ৭ | ০ | ০ | ৭১.৪৩ | c ধ্রুব পারাশার b মোহাম্মদ রোহিদ খান |
ওয়াসিম আলি | ১ | ২ | ০ | ০ | ৫০.০০ | এলবিডব্লিউ b হায়দার আলি |
ফয়সাল শাহ | ৯ | ১২ | ০ | ১ | ৭৫.০০ | c মোহাম্মদ ওয়াসিম b হায়দার আলি |
আরিয়ান বিস্ট | ২৪ | ৩২ | ২ | ০ | ৭৫.০০ | b মোহাম্মদ জাওয়াদুল্লাহ |
বিনায়ক শুক্লা (WK) | ২০ | ১৭ | ২ | ০ | ১১৭.৬৫ | c মোহাম্মদ জাওয়াদুল্লাহ b জুনায়েদ সিদ্দিকী |
জিতেন রমানন্দী | ১৩ | ৯ | ২ | ০ | ১৪৪.৪৪ | c আলিশান শারাফু b মোহাম্মদ জাওয়াদুল্লাহ |
হাসনাইন শাহ | ০ | ৩ | ০ | ০ | ০.০০ | b জুনায়েদ সিদ্দিকী |
শাকিল আহমেদ | ১৪ | ১০ | ১ | ১ | ১৪০.০০ | অপরাজিত |
সময় শ্রীবাস্তব | ৬ | ৮ | ১ | ০ | ৭৫.০০ | রান আউট |
অতিরিক্ত রান (Extras run): ১৬ (ওয়াইড ১৩,লেগ বাই ৩ )
মোট রান: ১৩০ (১০ উইকেট, ১৮.৪ ওভার)
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বোলিং
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বোলারদের মধ্যে জুনায়েদ সিদ্দিকী অসাধারণ বোলিং করেন এবং ৪ উইকেট তুলে নেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বোলিং স্কোরকার্ড
বোলার | ওভার | মেডেন | রান | উইকেট | ইকোনমি |
জুনায়েদ সিদ্দিকী | ৪ | ০ | ২৩ | ৪ | ৫.৮০ |
মোহাম্মদ রোহিদ খান | ২.৪ | ০ | ২৭ | ১ | ১০.১০ |
হায়দার আলি | ৪ | ০ | ২২ | ২ | ৫.৫০ |
ধ্রুব পারাশার | ২ | ০ | ১৪ | ০ | ৭.০০ |
হর্ষিত কৌশিক | ৩ | ০ | ২৩ | ০ | ৭.৭০ |
মোহাম্মদ জাওয়াদুল্লাহ | ৩ | ০ | ১৮ | ২ | ৬.০০ |
ম্যাচের ফলাফল ও তাৎপর্য
এই জয়টি সংযুক্ত আরব আমিরাতের জন্য টুর্নামেন্টে টিকে থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অন্যদিকে, ওমান তাদের দ্বিতীয় পরাজয়ের পর টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যাটসম্যান এবং বোলারদের সম্মিলিত পারফরম্যান্স এই ম্যাচে জয় এনে দিয়েছে।
এই ম্যাচের সেরা ৫টি মুহূর্ত
১. মোহাম্মদ ওয়াসিম ও আলিশান শারাফুর ১০৮ রানের ওপেনিং জুটি: ম্যাচের প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ছিল এই দুজনের ওপেনিং পার্টনারশিপ। তারা দুজন মিলে ১০৮ রান যোগ করে দলের জন্য একটি শক্ত ভিত গড়ে দেন, যা ওমানের বোলারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
২. জুনায়েদ সিদ্দিকীর ৪ উইকেট শিকার: এই ম্যাচের সবচেয়ে বড় টার্নিং পয়েন্ট ছিল জুনায়েদ সিদ্দিকীর বোলিং স্পেল। তিনি মাত্র ২৩ রান দিয়ে ৪টি মূল্যবান উইকেট তুলে নিয়ে ওমানের ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে দেন এবং জয়ের পথ প্রশস্ত করেন।
৩. ওয়াসিমের অধিনায়কোচিত ৬৯ রানের ইনিংস: অধিনায়ক হিসেবে মোহাম্মদ ওয়াসিমের ৬৯ রান, যা তিনি ৫৪ বলে করেছেন, ছিল ম্যাচের সেরা ব্যাটিং পারফরম্যান্স। তার এই ইনিংসই দলকে ১৭২ রানের বড় স্কোর গড়তে সাহায্য করে।
৪. হর্ষিত কৌশিকের ঝড়ো ফিনিশিং: ম্যাচের শেষ দিকে হর্ষিত কৌশিক ৮ বলে ১৯ রানের একটি কার্যকরী ইনিংস খেলেন, যেখানে দুটি ছক্কা ছিল। তার এই ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসটি দলের মোট স্কোরকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।
৫. ওমানের নিয়মিত উইকেট পতন: ১৭৩ রানের কঠিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওমান শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে। জুনায়েদ সিদ্দিকীর প্রথম স্পেলের পর তাদের রানের গতি কমে যায় এবং তারা কোনো বড় পার্টনারশিপ গড়তে ব্যর্থ হয়, যা শেষ পর্যন্ত পরাজয়ের কারণ হয়।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ)
কোন দল জয় লাভ করেছে এবং কত রানে?
সংযুক্ত আরব আমিরাত ৪২ রানে জয় লাভ করেছে।
কোন ব্যাটসম্যান সবচেয়ে বেশি রান বানিয়েছে?
সংযুক্ত আরব আমিরাতের অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিম ৬৯ রান করে সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন।
এই ম্যাচের সেরা বোলার কে ছিলেন?
সংযুক্ত আরব আমিরাতের জুনায়েদ সিদ্দিকী ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা বোলার নির্বাচিত হন।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ কে ছিলেন?
মোহাম্মদ ওয়াসিম তার ব্যাটিং পারফরম্যান্সের জন্য ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন।
ম্যাচটি কোন স্টেডিয়ামে ও কোন দেশে খেলা হয়েছিল?
এই ম্যাচটি ওমানের মাস্কাটের আল আমিরাত ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (Al Amerat Cricket Ground) অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
Your comment will appear immediately after submission.