আকাশের দিকে তাকিয়ে কখনো কি ভেবে দেখেছেন, মেঘ থেকে কীভাবে অবিরাম জল ঝরে পড়ে? আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা এই বৃষ্টির পেছনে রয়েছে এক অসাধারণ প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, যাকে বলা হয় জলচক্র (Water Cycle)। এই চক্রের মাধ্যমেই পৃথিবী তার জলকে বারবার ব্যবহার করে। চলুন, সহজভাবে জেনে নিই কীভাবে মেঘ থেকে বৃষ্টির জন্ম হয়।
জলচক্র: বৃষ্টির উৎস
বৃষ্টি তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়াটি শুরু হয় জলচক্রের তিনটি প্রধান ধাপ দিয়ে:
১. বাষ্পীভবন (Evaporation)
সূর্যের তাপে নদী, পুকুর, সমুদ্র এবং অন্যান্য জলাশয়ের জল গরম হয়। এই গরম হওয়ার ফলে জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়ে হালকা হয়ে যায় এবং উপরে আকাশের দিকে উঠতে থাকে। গাছপালা থেকেও বাষ্প আকারে জল নির্গত হয়, যাকে বলা হয় প্রস্বেদন (Transpiration)।
২. ঘনীভবন (Condensation)
জলীয় বাষ্প যত উপরে ওঠে, তাপমাত্রা তত কমতে থাকে। ঠাণ্ডা বাতাসের সংস্পর্শে এসে এই জলীয় বাষ্প আবার tiny water droplets বা বরফের কণায় পরিণত হয়। এই ছোট ছোট কণাগুলো বাতাসের ধূলিকণা বা লবণের কণার সঙ্গে মিশে ভেসে থাকে এবং একত্রিত হয়ে মেঘ (Clouds) তৈরি করে।
৩. অধঃক্ষেপণ (Precipitation)
মেঘে জলকণার পরিমাণ বাড়তে থাকলে এবং তারা একে অপরের সঙ্গে মিশে বড় ও ভারী হতে শুরু করে। যখন এই জলকণাগুলো এতই ভারী হয়ে যায় যে বাতাস তাদের আর ধরে রাখতে পারে না, তখন তারা বৃষ্টির ফোঁটা হিসেবে পৃথিবীর দিকে নেমে আসে। অনেক সময় বেশি ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় এই জলকণাগুলো বরফে পরিণত হয়ে শিলাবৃষ্টি বা তুষারপাত (snow) হিসেবেও নিচে নেমে আসে।
এভাবেই জলচক্রের মাধ্যমে পৃথিবীর জল ক্রমাগত এক অবস্থা থেকে আরেক অবস্থায় রূপান্তরিত হতে থাকে, আর আমরা পাই জীবনদায়ী বৃষ্টি।
Your comment will appear immediately after submission.