২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনাল

✅ বিশেষজ্ঞ দ্বারা অনুমোদিত
5/5 - (2 votes)

লন্ডনের লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড, ১৪ই জুলাই ২০১৯। ক্রিকেট ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দিনের সাক্ষী থাকল এই মাঠ। বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি স্বাগতিক ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ড, যাদের ক্রিকেটীয় দর্শনে রয়েছে স্বতন্ত্রতা এবং দৃঢ় মানসিকতা। এই ফাইনাল শুধু একটি খেলা ছিল না, ছিল স্নায়ুচাপ, উত্তেজনা আর ভাগ্যের এক চূড়ান্ত পরীক্ষা।

টসে জিতে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন।

Advertisements

ঠান্ডা মাথায় শুরু করে কিউই ব্যাটসম্যানরা। ওপেনার হেনরি নিকোলস ৫৫ রানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান টম ল্যাথামও ৪৭ রান যোগ করেন। তবে ইংল্যান্ডের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে নিউজিল্যান্ড ৫০ ওভারে ২৪১ রান তুলতে সক্ষম হয়। ক্রিস ওকস এবং লিয়াম প্লাঙ্কেট ইংল্যান্ডের পক্ষে তিনটি করে উইকেট শিকার করেন।

নিউজিল্যান্ড স্কোরকার্ড

ব্যাটাররান বল স্ট্রাইক রেট আউট হওয়ার ধরন
মার্টিন গাপটিল১৯১৮১০৫.৫৫এলবিডব্লিউ – ক্রিস ওকস
হেনরি নিকোলস৫৫৭৭৭১.৪৩বোল্ড – লিয়াম প্লাঙ্কেট
কেন উইলিয়ামসন (C)৩০৫৩৫৬.৬০ক্যাচ – জস বাটলার, বোল্ড – লিয়াম প্লাঙ্কেট
রস টেলর১৫৩১৪৮.৩৮এলবিডব্লিউ – মার্ক উড
টম ল্যাথাম (WK)৪৭৫৬৮৩.৯২ক্যাচ – জেমস ভিন্স, বোল্ড – ক্রিস ওকস
জেমস নিশাম১৯২৫৭৬.০০ক্যাচ – জো রুট, বোল্ড – লিয়াম প্লাঙ্কেট
কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম১৬২৮৫৭.১৪ক্যাচ – জেমস ভিন্স, বোল্ড – জোফরা আর্চার
ম্যাট হেনরি৬৬.৬৬বোল্ড – ক্রিস ওকস
মিচেল স্যান্টনার৫*১০০.০০নট আউট
লকি ফার্গুসন০*০.০০নট আউট

অতিরিক্ত: ২৬ (বাই-৫, লেগ বাই-১৪, ওয়াইড-৭, নো-বল-০) মোট রান: ২৪১ (৫০ ওভারে ৮ উইকেট)

পতন হওয়া উইকেট: ১-২৯ (গাপটিল), ২-৮৭ (উইলিয়ামসন), ৩-১০৩ (টেলর), ৪-১৪২ (নিকোলস), ৫-১৭৩ (ডি গ্র্যান্ডহোম), ৬-২২১ (নিশাম), ৭-২৩২ (ল্যাথাম), ৮-২৩৮ (হেনরি)

ইংল্যান্ড বোলিং

বোলারওভার মেডেন রান উইকেট ইকোনমি
জোফরা আর্চার১০৪২৪.২০
ক্রিস ওকস৩৭৪.১১
লিয়াম প্লাঙ্কেট১০৪২৪.২০
মার্ক উড১০৪৯৪.৯০
আদিল রশিদ১১৬৩৫.৭২
বেন স্টোকস২০৬.৬৬
জো রুট৪.৫০



নিউজিল্যান্ডের স্কোরকার্ড: ২৪১ রান/৮ উটকেট/৫০ ওভার

২৪২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ডের শুরুটা খুব একটা মসৃণ ছিল না। তবে জেসন রয় এবং জনি বেয়ারস্টো একটি মাঝারি মানের পার্টনারশিপ গড়েন। এরপর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকে ইংল্যান্ড। যখন মনে হচ্ছিল নিউজিল্যান্ডের জয় সময়ের অপেক্ষা, তখনই ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন বেন স্টোকস। ৮৪ রানের একটি অসাধারণ লড়াকু ইনিংস খেলেন তিনি। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন জস বাটলার, যিনি ৫৯ রান করেন। শেষ ওভারে নাটকীয় মোড় নেয় খেলা, যখন ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য ১৫ রান দরকার ছিল এবং স্টোকস শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন।ইংল্যান্ডও ঠিক ৫০ ওভারে ২৪১ রান তোলে, ফলে ম্যাচ টাই হয় এবং খেলা সুপার ওভারে গড়ায়।

ইংল্যান্ড স্কোরকার্ড

ব্যাটাররান বল স্ট্রাইক রেট আউট হওয়ার ধরন
জেসন রয়১৭২০৮৫.০০ক্যাচ – টম ল্যাথাম, বোল্ড – ম্যাট হেনরি
জনি বেয়ারস্টো৩৬৫৫৬৫.৪৫বোল্ড – লকি ফার্গুসন
জো রুট৩০২৩.৩৩ক্যাচ – টম ল্যাথাম, বোল্ড – কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম
ইয়ন মরগান (C)১৭৫২.৯৪ক্যাচ – লকি ফার্গুসন, বোল্ড – জেমস নিশাম
বেন স্টোকস৮৪*৯৮৮৫.৭১নট আউট
জস বাটলার (WK)৫৯৬০৯৮.৩৩ক্যাচ – টিম সাউদি, বোল্ড – লকি ফার্গুসন
ক্রিস ওকস৪০.০০বোল্ড – লকি ফার্গুসন
লিয়াম প্লাঙ্কেট১০১১৯০.৯১ক্যাচ – ট্রেন্ট বোল্ট, বোল্ড – জেমস নিশাম
আদিল রশিদ০.০০রান আউট – জেমস নিশাম
জোফরা আর্চার০.০০রান আউট – মার্টিন গাপটিল
মার্ক উড০.০০রান আউট – মার্টিন গাপটিল

অতিরিক্ত: ১৫ (লেগ বাই-৮, ওয়াইড-৭, নো-বল-০) মোট রান: ২৪১ (৫০ ওভারে ১০ উইকেট)

পতন হওয়া উইকেট: ১-২৮ (রয়), ২-৫৯ (রুট), ৩-৭১ (মরগান), ৪-৮৬ (বেয়ারস্টো), ৫-১৯৬ (বাটলার), ৬-২০৩ (ওকস), ৭-২২৭ (প্লাঙ্কেট), ৮-২৪০ (রশিদ), ৯-২৪১ (আর্চার), ১০-২৪১ (উড)

নিউজিল্যান্ড বোলিং

বোলারওভার মেডেন রান উইকেট ইকোনমি
ট্রেন্ট বোল্ট১০৬৭৬.৭০
ম্যাট হেনরি১০৪০৪.০০
কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম১০২৫২.৫০
লকি ফার্গুসন১০৫০৫.০০
জেমস নিশাম৪৩৬.১৪
মিচেল স্যান্টনার১৬৫.৩৩



ইংল্যান্ড স্কোরকার্ড: ২৪১ রান/১০ উটকেট/৫০ওভার

সুপার ওভারে ইংল্যান্ডের পক্ষে ব্যাট করতে নামেন বেন স্টোকস এবং জস বাটলার। তারা ১৫ রান সংগ্রহ করেন।

ইংল্যান্ড ব্যাটিং

ব্যাটাররান বল স্ট্রাইক রেটআউট হওয়ার ধরন
বেন স্টোকস৮*২৬৬.৬৭নট আউট
জস বাটলার৭*২৩৩.৩৩নট আউট
অতিরিক্ত: (ওয়াইড – ০, নো-বল – ০)

নিউজিল্যান্ড বোলিং

বোলারওভার মেডেন রান উইকেট
ট্রেন্ট বোল্ট১৫



ইংল্যান্ড স্কোরকার্ড: ১৫ রান/০উটকেট/১ ওভার

জবাবে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে মার্টিন গাপটিল এবং জেমস নিশাম ব্যাট করতে নেমে ১৫ রানই করেন।

নিউজিল্যান্ড ব্যাটিং

ব্যাটাররান বল স্ট্রাইক রেটআউট হওয়ার ধরন
জেমস নিশাম১৩২৮০.০০নট আউট
মার্টিন গাপটিল১০০.০০রান আউট

অতিরিক্ত: (ওয়াইড – ১, নো-বল – ০)

পতন হওয়া উইকেট: ১- (রয়)

ইংল্যান্ড বোলিং

বোলারওভার মেডেন রান উইকেট
জোফরা আর্চার১৫



নিউজিল্যান্ডের স্কোরকার্ড: ১৫ রান/১ উটকেট/১ ওভার

সুপার ওভারও টাই হওয়ায়, আইসিসি-র নিয়ম অনুযায়ী যে দল ম্যাচে বেশি বাউন্ডারি মেরেছে, সেই দলকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। এই হিসেবে ইংল্যান্ড নিউজিল্যান্ডের চেয়ে বেশি বাউন্ডারি মারার সুবাদে প্রথমবারের মতো ক্রিকেট বিশ্বকাপের শিরোপা জেতে।

লর্ডসের এই ফাইনাল ম্যাচটি ক্রিকেট ইতিহাসে এক রোমাঞ্চকর অধ্যায় হিসেবে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। টাই হওয়া ম্যাচ, সুপার ওভারের উত্তেজনা এবং শেষ পর্যন্ত বাউন্ডারির নিয়মে ফল নির্ধারণ—এই সবকিছু মিলিয়ে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ ফাইনাল ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে এক দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি তৈরি করে রেখেছে। ইংল্যান্ডের দীর্ঘদিনের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হয়, আর নিউজিল্যান্ড তাদের অসাধারণ লড়াই সত্ত্বেও অল্পের জন্য শিরোপা হাতছাড়া করে। এই ফাইনাল প্রমাণ করে, ক্রিকেট সত্যিই অনিশ্চয়তার খেলা।

Advertisements
Avatar photo

arif

আরিফ – ক্রিকেট বিষয়ক আপডেট ও বিশ্লেষণের কনটেন্ট লেখক আমি আরিফ, ক্রিকেট আমার ভালোবাসা। নাজিবুল ডট কম-এ আমি প্রতিদিনের খেলা, স্কোর আপডেট, খেলোয়াড় বিশ্লেষণ ও আকর্ষণীয় ক্রিকেট গল্প শেয়ার করি।

আমার সব আর্টিকেল

“২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনাল”-এ 1-টি মন্তব্য

Your comment will appear immediately after submission.

মন্তব্য করুন