২ এপ্রিল, ২০১১ তারিখে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছিল২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ। এই ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল স্বাগতিক ভারত এবং শ্রীলঙ্কা।
টসে জিতে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন।
শুরুটা সতর্ক হলেও মাহেলা জয়াবর্ধনে একটি অসাধারণ অপরাজিত সেঞ্চুরি (৮৮ বলে ১০৩*) করেন। তার সাথে তিলকরত্নে দিলশান ৩৩ রান এবং কুমার সাঙ্গাকারা (৪৮ রান গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। শ্রীলঙ্কা নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৭৪ রান তোলে। ভারতের পক্ষে জহির খান ও যুবরাজ সিং দুটি করে এবং হরভজন সিং একটি উইকেট নেন।
শ্রীলঙ্কার স্কোর : ২৭৪রান/৬ উইকেট/৫০ ওভার
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ভারতের শুরুটা ভালো হয়নি। লাসিথ মালিঙ্গার প্রথম ওভারেই বীরেন্দ্র শেওয়াগ এলবিডব্লিউ হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। এরপর শচীন টেন্ডুলকার ও ১৮ রান লাসিথ মালিঙ্গার শিকার হন। ৩১ রানে দুই উইকেট হারানোর পর গৌতম গম্ভীর এবং বিরাট কোহলি দলের হাল ধরেন। এই জুটি ৮৩ রান যোগ করে। বিরাট কোহলি ৩৫ রান করে আউট হলেও গৌতম গম্ভীর এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলেন। যুবরাজ সিং ক্রিজে আসার পর ধীরস্থিরভাবে খেলেন এবং গৌতম গম্ভীরের সাথে ১০৯ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন। গৌতম গম্ভীর ৯৭ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে থিসারা পেরেরার বলে বোল্ড হন। শেষ পর্যন্ত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি অপরাজিত ৯১* রানের ঠান্ডা মাথার ইনিংস খেলেন এবং যুবরাজ সিং অপরাজিত ২১* রান করে ভারতকে ৪৮.২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। মহেন্দ্র সিং ধোনি সেই ঐতিহাসিক ছক্কা আজও ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে গেঁথে আছে।
ভারত স্কোর: ২৭৭ রান/ ৪ উইকেট/৪৮.২ ওভার
ভারত (১০ বল ৬ উইকেটে জয়লাভ করে)।
মহেন্দ্র সিং ধোনি তার ম্যাচ জেতানো ৯১* রানের ইনিংসের জন্য ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। যুবরাজ সিং পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জন্য ম্যান অফ দ্য টুর্নামেন্টের পুরস্কার জেতেন।
মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন ভারত দল কুমার সাঙ্গাকারার নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে পরাজিত করে দীর্ঘ ২৮ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা জেতে।
হোম গ্রাউন্ডে জয়: ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নিজেদের ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জেতার অনুভূতি ছিল অসাধারণ।
মহেন্দ্র সিং ধোনির ফিনিশিং টাচ: অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির ঠান্ডা মাথায় খেলা এবং সেই জয়সূচক ছক্কা আজও ক্রিকেট ইতিহাসে অমর হয়ে আছে।
গৌতম গম্ভীরের লড়াই: ফাইনালে গৌতম গম্ভীরের ৯৭ রানের লড়াকু ইনিংস ভারতের জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিল।
যুবরাজ সিং অলরাউন্ড পারফরম্যান্স: যুবরাজ সিং ব্যাট ও বল হাতে পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ পারফর্ম করেছিলেন এবং ফাইনালেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
২০১১ সালের বিশ্বকাপ ফাইনাল ভারতীয় ক্রিকেটের এক সোনালী অধ্যায় এবং এই জয় আজও প্রতিটি ভারতবাসীর মনে এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে।
Your comment will appear after author approval.